টনসিলাইটিস(Tonsillitis) বা টনসিলের প্রদাহ এর কারণ, উপসর্গ, জটিলতা ও চিকিৎসা
টনসিলের সমস্যার কারণে গলাব্যথায় ভুগে থাকেন অনেকে। যদিও টনসিলের সমস্যা সব বয়সেই হয়ে থাকে, কিন্তু শিশুদের শিশুদের মধ্যে এই সংক্রমণ সাধারণ ব্যাপার। টনসিলের এই প্রদাহ কে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় টনসিলাইটিস বা টনসিলের প্রদাহ।
টনসিল(Tonsil) কী?
টনসিল হলো আমাদের শরীরের প্রতিরোধব্যবস্থার একটা অংশ এবং আমাদের মুখের ভেতরেই চারটি গ্রুপে এরা অবস্থান করে। এদেরকে লিঙ্গুয়াল, প্যালাটাইন, টিউবাল ও অ্যাডেনয়েড বলা হয়। জিহ্বার শেষ প্রান্তে, আলজিহ্বার নিচে ডান ও বামপাশে বাদামের মতো ১.৫ সেন্টিমিটার আকারের লালবর্ণের মাংসপিণ্ডকে টনসিল (Tonsil) বলা হয়ে থাকে।
টনসিলাইটিস(Tonsillitis) কি?
টনসিলাইটিস(Tonsillitis) বলতে টনসিল(Tonsil)এর সংক্রমণকে বোঝায়। টনসিল সমূহ যখন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাকের সংক্রমণ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে প্রদাহের বা ইনফেকশনের সৃষ্টি করে বিভিন্ন সমস্যার সৃস্টি করে। জন্ম থেকেই গলার মধ্যে এই টনসিল থাকে এবং বাচ্চাদের বেলায় টনসিল আকারে বড় দেখা যায় পর্যায় ক্রমে (৫-৬ বছর বয়সের মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি বড় আকৃতিতে পৌঁছায়), বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টনসিল ক্রমান্বয়ে ছোট হতে থাকে। টনসিলের প্রদাহ সাধারণত বর্ষায় বেশি হয়।
টনসিলাইটিস(Tonsillitis) এর কারণ
টনসিলাইটিস ভাইরাস অথবা ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সংক্রমণ। নাক দিয়ে পানি পড়া, কাশি ও জ্বরের মতো সামান্য সর্দি থেকে ধীরে ধীরে টনসিলাইসের রূপ নিতে পারে। আইসক্রিম, ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার, ঠান্ডা পানিও ক্ষতির কারণ হতে পারে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, দূষণ, অপুষ্টিজনিত সমস্যা হতেও টনসিলাইটিস হয়ে থাকে।
টনসিলাইটিস(Tonsillitis) এর লক্ষণ
গলায় খসখসেভাব
গলায় ব্যথা
খাবার গেলার সময় ব্যথা।
মাথাব্যথা, উচ্চ তাপমাত্রা।
টনসিল ফুলে ওঠা
মুখ দিয়ে লালা বের হয় ও কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে যেতে পারে।
মুখে দুর্গন্ধ
টনসিলে হলুদ অথবা সাদা স্তর পড়া।
কানে ব্যথা হতে পারে।
খাবার খেতে কষ্ট ও মুখ হাঁ করতে অসুবিধা হয়।
টনসিলাইটিস(Tonsillitis) এর প্রকারভেদ
- অ্যাকিউট টনসিলাইটিস
- ক্রনিক টনসিলাইটিস
টনসিলাইটিস(Tonsillitis) এ করণীয়
- বেশি করে আরাম করা।
- প্রচুর পরিমাণে তরল পান।
- নরম খাবার খাওয়া।
- লবণ পানি দিয়ে গার্গেল করা।
- গলায় গরম সেক দেয়া যেতে পারে।
টনসিলাইটিস(Tonsillitis) এর চিকিৎসা
টনসিলাইটিস(Tonsillitis) সাধারণত হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সেবন এ খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়। কিন্তু ক্রনিক টনসিলাইটিস এর ক্ষেত্রে বেশ দীর্ঘ সময় ধরে হোমিও ওষুধ চালাতে হয়। খুব গুরুতর হইলে অপারেশন করে ফেলাটাই ভাল।